বাংলা সাহিত্যধারা
বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ:
দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাহিত্য বিভাগ হয়েছেএকটি ১২০৪ সালে ইখতিয়ারউদ্দীন মুহাম্মদ বিন
বখতিয়ার খলজীর বঙ্গবিজয়, অপরটি ১৮০০ সালে
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রিতিষ্ঠা
বাংলা সাহিত্যের যুগ:
ক, প্রাচীন যুগ: ৬৫০-১২০০ খ্রিষ্টাব্দখ, মধ্যযুগ : ১২০০-১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ
গ, আধুনিক যুগ: ১৮০০ থেকে বর্তমান
চর্যাপদ :
বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শন চর্যাপদহরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজ গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদের সন্ধান পায় ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে প্রাকাশিত হয়
চর্যাপদের কবিগন:
চর্যাপদের মোট পদকর্তা ২৪ জন সবচেয়ে বেশি পদ রচয়িতা কাহুপা
লুইপা:
চর্যার ১ নং পদ( কাআ তরুবর পাঞ্ব বি ডাল) লুইপার রচনা হরপ্রসাদ শাস্ত্রী লুইপাকে আদি কবি বলেছেন
শবরপা:
শহীদুল্লাহ দেখিয়েছেন, প্রাচীনতম চর্যাকার হলেন শবরপা
তার রচনা,(উঞ্বা উঞ্বা পাবত তহিঁ বসই সবরী বালী
মোরঙ্গ পীচ্ছ পরিহান সবরী গীবত গুঞ্জরী মালী
ভসুকুপা:
ভুসুকুপা কবির ছদ্মনাম তার আসল নাম শান্তিদেব তার রচিত রচনা ( আজি ভুসুক বঙ্গালী ভইলী
নিঅ ঘরিণী চন্ডালে লেলী)
আবদুল হাকিম:
জন্মস্থান: সুধারাম, সন্দ্বীপ,নোয়াখালী।কাব্যগ্রন্থ: নূরনামা,ইউসুফ জোলেখা, লালমতি,সয়ফুলমুলক,কারবালা ও শহরনামা।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত:
জন্মস্থান: যশোর সাগরদাঁড়ি গ্রামকাব্যগ্রন্থ: তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, মেঘনাদবধ-কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলি
কবিতার চরণ:
'সতত হে নদ, তুমি পড় মোর মনে
সতত তোমার কথা ভাবি বিরলে।'
'উর্ধ্ব শির যদি তুমি কুল মনে ধনে;
করিওনা ঘৃনা তব নীচ শির জনে।'
নাটক: শর্মিষ্ঠা, পদ্মাবতী, কৃষ্ণকুমারী, মায়াকানন
প্রহসন: একেই কি বলে সভ্যতা, বুড়ো সালিকের ঘাড়ে রোঁ।
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়:
জন্মস্থান: গুলিটা রাজবল্লভহাট, হুগলি।কাব্যগ্রন্থ : চিন্তাতরঙ্গিনী, বীরবাহু, কবিতাবলী, আশাকানন, ছায়াময়ী, চিত্তবিকাশ।
মহাকাব্য: বৃত্রসংহার।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর:
জন্মস্থান : জেড়াসাঁকো, কলকাতা,ভারত।কাব্যগ্রন্থ : মানসী, সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালি, ক্ষণিকা, গীতাঞ্জলী, বলাকা, পূরবী, বিচিত্রা, সেঁজুতি, শেষ লেখা।
উপন্যাস : চোখের বালি, গোরা, ঘরে-বাইরে, চতুরঙ্গ, নৌকাডুবি, যোগাযোগ, রাজর্ষি, শেষের কবিতা।
নাটক: চিরকুমার সভা, ডাকঘর, মুকুট, মুক্তধারা, রক্তকরবী, রাজা
কবিতার চরণ:
'নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে
তিল ঠাঁই আর নাহিরে
ওগো, আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে।'
'যে আছে মাটির কাছাকাছি
সে কবির বাণী লাগি কান পেতে আছি।'
কাজী নজরুল ইসলাম:
জন্মস্থান: পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামেকাব্যগ্রন্থ : অগ্নিবীণা, সঞ্চিতা, দোলন চাঁপা, চক্রবাক, পুবের হাওয়া, ছায়ানট, সাম্যবাদী, ঝিঙেফুল, ভাঙ্গার গান।
উপন্যাস :বাঁধনহারা, মৃত্যুক্ষুধা, কুহেলিকা
নাটক: ঝিলিমিলি, মধুমালা
কবিতার চরণ:
'গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে বড় কিছু,নহে কিছু মহীয়ান!'
'আমি চাইনা বিচার হাশরের দিন
চাই করুনা তোমার ওগো হাকীম।'
সুধীন্দ্রনাথ দত্ত:
জন্মস্থান: হাতিবাগান,কলকাতা,ভারত।কাব্যগ্রন্থ: ক্রন্দসী, উত্তরফাল্গুনী,সংবর্ত, অর্কেস্ট্রা
কবিতার চরণ:
'অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে?'
জীবনানন্দ দাশ:
জন্মস্থান: বরিশাল জেলাকাব্যগ্রন্থ: ঝরা পালক, রুপসী বাংলা, ধূসর পান্ডুলিপি, বনোলতা সেন, বেলা অবেলা কালবেলা, মহাপৃথিবী
উপন্যাস: মাল্যবান, সতীর্থ
কবিতার চরণ:
'সুরঞ্জনা, ওইখানে যেয়ো নাকো তুমি'
'পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে বলেছিল নাটোরের বনলতা সেন'
বদ্ধদেব বসু:
জন্মস্থান: কুমিল্লা জেলাকাব্যগ্রন্থ: বন্দীর বন্দনা, কঙ্কাবতী, স্বাগত বিদায়, যে আঁধার আলোর অধিক
উপন্যাস: জঙ্গম, তিথিডোর, সানন্দা, নির্জন স্বাক্ষর।
রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ:
জন্মন্থান: বরিশাল জেলাকাব্যগ্রন্থ: উপদ্রুত উপকূল, মানুষের মানচিত্র
কবিতার চরণ:
'জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন'
আল মাহমুদ:
জন্মন্থান: মোড়াইল গ্রাম, ব্রাক্ষণবাড়িয়াকাব্যগ্রন্থ: সোনালী কাবিন, কালের কলস, বখতিয়ারের ঘোড়া, পাখির কাছে ফুলের কাছে।
উপন্যাস: উপমহাদেশ, আগুনের মেয়ে, ডাহুকী।
শেষকথা:
প্রাচীন চর্যাপদ থেকে শুরু করে আধুনিক সাহিত্য পর্যন্ত বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে সাহিত্যের নতুন ধারা ও দর্শন এসেছে। এবং নতুন কবি ও সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধি করেছে যা চলোমান রয়েছে।